‘ম্যাটিকুলাস মব জাস্টিস’-এর দায়মুক্তি!
আমাদের ‘জেন-জি’র বিপ্লবী হওয়ার হুজুগ আর মিডিলক্লাস নানামুখী ন্যারেটিভের ফাঁদে পড়ে বাস্তবায়ন করে দিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘প্ল্যান ম্যাটিকুলাস’! জীবন হারিয়ে শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সাড়ে সাতশোর বেশি মানুষ (এই আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের পক্ষ থেকে সংখ্যাটি এখনো সুনিশ্চিত করা হয়নি। তাদের এক এক সময়ের এক এক বিবৃতিতে বাড়ছে নিহতদের সংখ্যা), আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। অনেক সরকারি-বেসরকারি ভবন ও যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অনেক থানায় হামলার পর অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
আন্দোলনের সময় ঘটেছে নানা ধরণের ফৌজদারি অপরাধ। এখন ক্ষমতা দখল করে বসে থাকা কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, আন্দোলনের পক্ষে যারা ছিল তাদের নামে কোনো মামলা করা যাবে না! এ কেমন বৈষম্যমূলক আদেশ! এ কেমন সংস্কার?
তারা তো মেধাবী-বৈষম্যবিবোধী – তারা কেন বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু করবে? তাদের ফরমান তো এমন হওয়ার কথা ছিল – আন্দোলনের সময় ঘটা সকল ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত হবে – যেই অপরাধ করে থাকুক বিচার হবে – এমনকি তারাও যদি কোন ফৌজদারি অপরাধ করে থাকে তারও তদন্ত হবে! কিন্তু তদন্ত তো দূরে থাক – একেবারে দায়মুক্তি!
এটি কী তাহলে, মবের (Mob) মুল্লুক! বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার সংস্কার? আইনের শাসন?
গত ১৪ অক্টোবর ২০২৪ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছে গণঅভ্যুত্থানকে সফল করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে পনেরই জুলাই থেকে আটই অগাস্ট পর্যন্ত সংগঠিত গণঅভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেফতার বা হয়রানি করা হবে না। [১]
আইনের ছাত্র হিসাবে জানি, ফৌজদারি অপরাধ কখনো তামাদি হয় না – নেই দায়মুক্তি দেয়ার সুযোগ।
ফৌজদারি অপরাধে দায়মুক্তির উদাহরণ কোথায় পেয়েছেন? দায়িত্বপালনরত অবস্থায় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হবে আর সেটার বিচার হবে না! এদেশের সাধারণ মানুষ ৭.৬২ মিলিমিটার অস্ত্র বা কার্তুজে নিহত হলো যা এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে না – এই বিষয়টার তদন্ত হবে না? এই মানুষগুলো ‘প্ল্যান ম্যাটিকুলাস’ অনুযায়ী লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে এই Mob (ভিড়) কে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসলো সাম্রাজ্যবাদের দালালী করার জন্য?
ফৌজদারি অপরাধ কখনো তামাদি হয় না
আইনের একেবারে নগন্য ছাত্র হিসাবে এবার একটু কিতাবের ভাষায় বলি। এই ধরনের দায়মুক্তি ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতির সঙ্গে সম্পুর্ণ সংঘষিক। দেশের বলবত সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করি:
১. ন্যায়বিচারের মৌলিক অধিকার
ন্যায়বিচার প্রত্যেকের অধিকার। রাষ্ট্র বা সরকার যদি কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা না করার বা গ্রেফতার না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার লঙ্ঘিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালে আর্জেন্টিনায় আর্থিক সংকটের সময় সহিংস বিক্ষোভ চলছিল এবং অনেক পুলিশ সদস্যসহ সাধারণ জনগণ নিহত হয়। দায়মুক্তি দেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, কারণ এটি ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করেছিল। আদালত পরবর্তীতে ওই প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে এবং অপরাধীদের বিচার করা হয়। [২]
২. আইনের চোখে সমানতা
আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যদি দায়মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে আইনের শাসনের নীতির উপর আঘাত আসে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের “আরব বসন্ত” আন্দোলনের সময় তিউনিসিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন অনেক সহিংসতা হয়েছিল। বিক্ষোভে জড়িত কিছু অপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু তিউনিসিয়ার বিচারব্যবস্থা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছিল। [৩] [৪]
৩. বিচারহীনতা ও সামাজিক অস্থিরতা
দায়মুক্তি অপরাধীদের উৎসাহিত করতে পারে এবং সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করতে পারে, যা ভবিষ্যতে সহিংসতা ও অরাজকতা বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, মেক্সিকোর ড্রাগ ওয়ার-এর সময় সরকার (২০০৬-২০১২) বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মামলা করার পরিবর্তে দায়মুক্তি দিয়েছিল, যা অপরাধীদের আরো সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করেছিল এবং সামাজিক অস্থিরতা বাড়িয়েছিল। [৫] [৬]
৪. আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার
আন্তর্জাতিক আইনে যেমন International Covenant on Civil and Political Rights (ICCPR), যেখানে প্রতিটি ব্যক্তির ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেই অনুযায়ী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়মুক্তি সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে। হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বা ভাঙচুরের মতো অপরাধের শিকাররা ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখেন এবং এই ধরনের দায়মুক্তি তাদের সেই অধিকারের ওপর আঘাত হানে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়মুক্তি প্রদান আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, রুয়ান্ডার গণহত্যা (১৯৯৪) সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীদের দায়মুক্তি দেওয়ার কোনো প্রস্তাব না দিয়ে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয় এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়। দায়মুক্তি দিলে এটি ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করত, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। [৭] [৮]
৫. রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা
একটি রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব হল আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা। দায়মুক্তি প্রদান রাষ্ট্রের এই দায়িত্বকে উপেক্ষা করে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের সময় গণহারে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। বিপ্লবের পর সরকার অনেক অপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু এই পদক্ষেপটি জনগণের মধ্যে নৈতিক ক্ষোভ তৈরি করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হয়, কারণ এটি অপরাধীদেরকে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতার বাইরে রাখছিল। ফলে বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে যায় এবং সরকারের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। [৯] [১০]
৬. সাংবিধানিক অধিকারের সীমা
বেশিরভাগ দেশের সংবিধান ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারকে সমর্থন করলেও সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড বা লুটপাটের মতো অপরাধগুলোকে সমর্থন করে না। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন বা প্রতিবাদ করার অধিকার থাকতে পারে, কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করার অধিকার সংবিধানে নেই। সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য।
বিশ্বের অনেক দেশেই দাঙ্গা, আন্দোলন বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় এ ধরনের দায়মুক্তি প্রদান করা হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালে Black Lives Matter (BLM) আন্দোলনের সময় সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করা হয়েছিল। বিচার ব্যবস্থায় দাঙ্গা বা রাজনৈতিক উত্তেজনা চলাকালীন অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। [১১] [১২]
৭. ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার ও আইনি অধিকার
যে সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থা গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যেমন পুলিশ সদস্যরা নিহত হয়েছেন, বা সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দায়মুক্তি প্রদান করা ভুক্তভোগীদের প্রতি অবিচার করবে এবং তাদের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে। যখন দায়মুক্তি দেওয়া হয়, তখন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। উদাহরণ হিসেবে, ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। যুদ্ধের পর সরকার দায়মুক্তি প্রদানের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এটিকে চ্যালেঞ্জ করে। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে আন্তর্জাতিক চাপে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দিকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা হয়। [১৩] [১৪]
দায়মুক্তি দিয়েও কি রক্ষ হবে?
অনেকগুলো বিদেশি উদাহরণ হয়েছে, এবার এদেশের উদাহরণ দেয়। গোল্ডফিশের মোমোরি না হলে নিশ্চয় মনে আছে, মন্ত্রণালয়ের কোন কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতি নয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তি থেকে রক্ষা দিতে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ প্রণয়ন করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন, যা “১৯৭৫ সালের অধ্যাদেশ নং ৫০” নামে পরিচিত ছিল। সেদিন ‘দ্য বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিশড বাই অথিউরিটি’তে লেখা অধ্যাদেশটিতে খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর করেছিলেন। মোশতাকের স্বাক্ষরের পর অধ্যাদেশে তৎকালীন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এইচ রহমানের স্বাক্ষরও সংযুক্ত ছিল।
পরে ১৯৭৯ সালের ৬ই এপ্রিল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত দ্বিতীয় সংসদে এই কালো আইনটিকে অনুমোদন দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, সে বছরের ৯ জুলাই
তখনকার সংসদ নেতা শাহ আজিজুর রহমান পঞ্চম সংশোধনী বিলটি উত্থাপন করেছিলেন। এটি পাস হয়েছিল ২৪১-০ ভোটে এবং ৯ জুলাই সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর খুনি এবং খুনিদের সহযোগীরা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেয়া যে, যেহেতু এটি সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে এটি আর পরিবর্তন যাবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আর করা যাবে না। [১৫]
দীর্ঘ ২১ বছর পর, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে এবং সপ্তম জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি আইন বাতিলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। দীর্ঘ সময় পর ২০১০ সালে উচ্চ আদালতের এক রায়ে পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। [১৬] [১৭]
এবার একটু ক্রনোলজি মিলিয়ে দেখেন: খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে অধ্যাদেশ হয়েছে, সংসদ অনুমোদন করেছে, আইন হয়েছে এবং সংবিধান সংশোধনী করে বাংলাদেশ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বলা হয়েছে ‘দায়মুক্তি’ হয়ে গেছে আর ‘বিচার’ করা যাবে না। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়েছে?
এই বাংলার মাটিতে বিচার হবেই
এই বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হয়েছে। শাস্তি হয়েছে। যেসব খুনি পলাতক রয়েছে তাদের বিদেশের মাটিতে মুখলুকিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়। ‘ইনডেমনিটি’ নিয়ে এক সময় তারা গর্ব করে ‘খুনি’ পরিচয় নিয়ে দম্ভ করতো।
যারা আন্দোলনের নামে পুলিশ হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করে লাশের গণনা বাড়িয়েছে মধ্যবিত্তকে রাজপথে নামিয়েছে, থানা লুট করেছে, সাধারণ জনতার ভ্যাট-ট্যাক্সেরর টাকায় কেনা সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করেছে, আমজনতার জানমাল নষ্ট করে ‘দায়মুক্তি’র প্রেস রিলিজ নিয়ে গর্বে বুক ফুলিয়ে বেড়াচ্ছে তারা জেনে রাখুন এই বাংলার মাটিতে তাদের বিচার হবেই।
তারা যদি ভেবে থাকেন তাদের মাথার উপরে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের হাত আছে, বিশেষ রাজনৈতিক শক্তির কোলে বসে, সদ্য কারামুক্ত করে দেয়া গ্যাংস্টার-জঙ্গি, অনুগত কিশোর গ্যাং আর পুলিশের ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র, ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২ রাউন্ড গুলি [১৭] আর দায়মুক্তি দিয়ে তৈরি প্রাইভেট বাহিনী নিয়ে আইনের ঊর্ধ্বে!
তাহলে তারা এ দেশের ইতিহাস না পড়েই রাজনীতির মাঠে নেমেছেন – অস্ত্র দিয়ে, মাদক দিয়ে, বান্ডিল-বান্ডিল টাকার ঢেলে গুন্ডা বাহিনী তৈরি করেও টিকে থাকতে পারে নাই। লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট আইন উপদেষ্টা আইনের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ওরফে আসিফ নজরুলের তো অনেক ভালো জানার কথা। ‘ক্যাম্পাসের যুবক’ উপন্যাস তো তারই লেখা। উপদেষ্টা পরিষদে থাকা সমন্বয়কেরা বাদে বাঁকিদের তো জানার কথা এ দেশের মানুষ খুব একটা বেশি সময় অন্যায় অবিচার সহ্য করে না। দায়মুক্তি দিয়ে মব জাস্টিস কে বৈধ করে কয়দিন বীর বাঙালিকে দমানো যাবে?
আঙ্কেল স্যাম আসবে বাঁচাতে?
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন ইরান-আফগানিস্তান থেকে মার্কিনিরা শুধু তাদের নাগরিকদের উড়িয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিল কিন্তু দালালদের সেইসব দেশই ফেলে গেছিল। একাত্তরেও কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর পৌছাতে পারে নাই।
দুইজন মার্কিনের ২টা উক্তি বলি:
আব্রাহাম লিংকন বলেছেন- “আপনি কিছু সময়ের জন্য সমস্ত মানুষকে বোকা বানাতে পারেন, এবং কিছু মানুষকে সব সময় বোকা বানাতে পারেন, কিন্তু আপনি সব সময় সব মানুষকে বোকা বানাতে পারবেন না।”
আর মার্ক টোয়েন বলে গেছেন -” মানুষকে বোকা বানানো সহজ , কিন্তু বোঝানো কঠিন যে তাদের বোকা বানানো হয়েছে।”
এখন দেখেন! আপনারা যা ভালো মনে করেন।
#ATeam 20241042
তথ্যসূত্র:
১. মামলা-গ্রেফতার থেকে দায়মুক্তির প্রশ্ন আসছে কেন, কারা পাবে? | https://www.bbc.com/bengali/articles/c4g9ynqdzglo
২. December 2001 riots in Argentina | https://simple.wikipedia.org/wiki/December_2001_riots_in_Argentina
৩. Five years after the tragedy that sparked an uprising, human rights remain at risk in Tunisia and beyond | https://www.amnestyusa.org/press-releases/five-years-after-the-tragedy-that-sparked-an-uprising-human-rights-remain-at-risk-in-tunisia-and-beyond/
৪. Chapter 5 Prison Escape and Its Political Imaginary in Times of Political Crisis: Tunisia, 2011–2016 | https://link.springer.com/chapter/10.1007/978-3-319-64358-8_6
৫. Criminal Violence in Mexico | https://www.cfr.org/global-conflict-tracker/conflict/criminal-violence-mexico
৬. Mexico: Organized Crime and Drug Trafficking Organizations | https://www.justice.gov/eoir/page/file/1198801/dl
৭. Rwanda: Justice After Genocide—20 Years On | https://www.hrw.org/news/2014/03/28/rwanda-justice-after-genocide-20-years
৮. International Criminal Tribunal for Rwanda | https://en.wikipedia.org/wiki/International_Criminal_Tribunal_for_Rwanda
৯. The 1979 Iranian Revolution’s enduring impact on the world | https://www.brookings.edu/articles/the-1979-iranian-revolutions-enduring-impact-on-the-world/
১০. Human rights violations persist in Iran 30 years after Islamic revolution | https://www.amnesty.org/en/latest/news/2009/02/human-rights-violations-persist-iran-30-years-after-islamic-revo/
১১. How Walz Responded to Riots in Minnesota After the Death of George Floyd | https://www.factcheck.org/2024/08/how-walz-responded-to-riots-in-minnesota-after-the-death-of-george-floyd/
১২. Movement for Black Lives: Feds targeted BLM protesters | https://www.opb.org/article/2021/08/18/movement-for-black-lives-feds-targeted-blm-protesters/
১৩. 15 Years Since Sri Lanka’s Conflict Ended, No Justice for War Crimes | https://www.hrw.org/news/2024/05/14/15-years-sri-lankas-conflict-ended-no-justice-war-crimes/
১৪. War crimes during the final stages of the Sri Lankan Civil War | https://en.wikipedia.org/wiki/War_crimes_during_the_final_stages_of_the_Sri_Lankan_Civil_War/
১৫. ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সুবিধাভোগী | https://www.dailyjanakantha.com/details/article/292673/ইনডেমনিটি-অধ্যাদেশ-এবং-বঙ্গবন্ধু-হত্যাকান্ডের-সুবিধাভোগী/
১৬. ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ | https://bn.wikipedia.org/wiki/ইনডেমনিটি_অধ্যাদেশ/
১৭. বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী | https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলাদেশেরসংবিধানেরপঞ্চম_সংশোধনী
১৮. বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট | https://www.ittefaq.com.bd/698868/বাংলাদেশ-পুলিশের-প্রায়-৬-হাজার-অস্ত্র-লুট/